বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম মানব জাতির জন্য একটি সতর্ক বার্তা দুচোখ মেলে আমাদের চারপাশে যা কিছু দেখছি সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ৷ এই আকাশ-বাতাস, মাঠ-প্রান্তর, নদী-সমুদ্র, গ্রহ-নত্র, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ, সর্বোপরি পৃথিবীর ভিতরে ও বাইরে যা কিছু আমরা দেখি বা না দেখি সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ৷ তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এক বিন্দু জমাট রক্ত থেকে যাকে ডাক্তারী ভাষায় বলা হয় শুক্রাণু ও ডিম্বানু মিলনের ফলে সৃষ্ট ভ্রূণ৷ এই ভ্রূণকে আল্লাহ তাআলা মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় ধ্বংস করতে পারতেন৷ তাহলে আমরা দুনিয়ার মুখ দেখতে পেতাম না৷ আল্লাহ ইচ্ছা করলে মাতৃগর্ভেই আমাদেরকে অন্ধ, বোবা, কালা, খোড়া বা কোন অঙ্গহানি করে দুনিয়ায় পাঠাতে পারতেন৷ কিন্তু আমাদেরকে তিনি তা করেননি৷ দুনিয়ায় পাঠিয়ে তিনি আমাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন৷ তার নিয়ামত পানি, বাতাস বিনা পয়সায় অহরহ পাচ্ছি৷ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তিনি জমিনে ফসল উত্পন্ন করেন৷ পৃথিবীর তাপমাত্রাকে মানুষের বসবাসের জন্য তিনি স্বাভাবিক রেখেছেন- এর চেয়ে বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা কোনটাই আমরা সহ্য করতে পারি না৷ তিনি ইচ্ছা করলে পানি, বাতাস সব বন্ধ করে দিতে পারেন, প্রচন্ড তাপ দিয়ে পৃথিবীর সব মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারেন, প্রচন্ড ঠান্ডায় বরফ বানাতে পারেন, ভুমিকম্প দিয়ে জমিনকে ওলটপালট করে দিতে পারেন, জলোচ্ছাস দিয়ে জনপদকে ভাসিয়ে দিতে পারেন, ঘুর্ণিঝড় দিয়ে সব ধ্বংস করে দিতে পারেন৷ এসবের নমুনা আমরা মাঝে মাঝে দেখি৷ আমাদেরকে তিনি এসব বিপদ থেকে মুক্ত রেখেছেন৷ তিনি আমাদের পরীা করতে চানঃ কে তার প্রতি কৃতজ্ঞ- আর কে অকৃতজ্ঞ, কে তার হুকুম পালন করে- আর কে করে না, কে আল্লাহর একক মতায় বিশ্বাসী আর কে তার সাথে শরীক করে, কে অদৃশ্যে বিশ্বাস করে আর কে কুফরী করে, কে তার প্রতি অনুগত আর কে সীমালংঘন করে৷ তিনি আমাদেরকে সময় বেঁধে দিয়েছেন মৃতু্যর আগ পর্যন্ত৷ কিন্তু কেউ জানে না কখন তার মৃতু্য হবে৷ আমাদের সামনেই অনেক নজির আছে- হঠাত্ স্ট্রোক করে মৃতু্য, সাপের কামড়ে মৃতু্য, হঠাত্ দুর্ঘটনায় মৃতু্য, গোলাগুলিতে মৃতু্য, ঝড়ে গাছ চাপায় মৃতু্য, বজ্রপাতে মৃতু্য, জলোচ্ছাসে মৃতু্য, আগুনে পুড়ে মৃতু্য, পাহাড় ধ্বসে মৃতু্য ইত্যাদি৷ আমাদের অনেকেই ভাবেন বৃদ্ধ বয়সে সাংসারিক ঝামেলা মিটিয়ে আল্লাহর ইবাদতে কাটাবো৷ কিন্তু সেই সময় আপনি পাবেন- তার কোন নিশ্চয়তা আছে কী? দুনিয়ায় আপনি যেটুকু সময় যেভাবে কাটাবেন তার উপর ভিত্তি করে আপনাকে মৃতু্যর পর অনন্ত জীবন কাটাতে হবে৷ দুনিয়ায় বেঁচে থাকা অবস্থায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে তার হুকুম পালন করলে আপনি মৃতু্যর পর বাস করবেন চিরসুখের জান্নাতে- সেখানে থাকবে না কোন অভাব, কোন দুঃখ৷ থাকবে কেবল অনাবিল শান্তি- এমন শান্তি যা আপনি কখনও কল্পনাও করতে পারেন না৷ বেহেশতে এমন খাদ্য ও পানীয় আপনাকে পরিবেশন করা হবে যার অপূর্ব স্বাদ আপনাকে মুগ্ধ করবে, এমন রাজকীয় বাড়িতে আপনাকে বাস করতে দেওয়া হবে যা আপনি কখনও চোখে দেখেননি, এমন সুন্দরী তরুনীরা আপনার সেবা করবে যাদের অপরূপ সৌন্দর্য দুনিয়ার মানুষ কখনও কল্পনাও করেনি৷ আপনার সকল ইচ্ছা সেখানে পূর্ণ করা...